এম এম লিংকন: বিশ্ববাজারে জ্বালানি গ্যাসের চড়া দাম ও সংকটের মধ্যে আবারো আশার আলো দেখালো দ্বীপজেলা ভোলা। শুক্রবার সকাল সাতটায় ইলিশা-১ নামের এই কূপের মুখে আগুন দেওয়া হয়। ডিএসটি টেস্টিংয়ের মাধ্যমে শুরুতে ১০ মিলিয়ন ঘনফুটের মতো গ্যাসের ফ্লো চলছে এই কূপে। এটি আরো বাড়বে। বাপেক্স সূত্রে জানা যায়, তাদের নকশা ও নির্দেশনা অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান রাশিয়ার গাজপ্রম কূপটিতে খননকাজ পরিচালনা করছে। 

বাপেক্স ভূ-তাত্ত্বিক বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার আলমগীর হোসেন বলছেন, ইলিশা কূপের ৩ হাজার ৪৩৩ মিটার গভীরতায় গ্যাসের সন্ধান মিলেছে। যা প্রায় ৪ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। আপাতত টেস্টিং চলছে। টেস্টিং শেষে বাকি তথ্য জানা যাবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাপেক্সের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা আমাদের নতুন সময়কে বলছেন,  সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ১৫ মে আনুষ্ঠানিকভাবে সব কিছু জানা যাবে। 

বাপেক্স জানায়, দেশীয় জ্বালানির উৎস অনুসন্ধানে কাজ করছে সরকার। এ লক্ষ্যে ২০২২-২৪ সময়কালের মধ্যে পেট্রোবাংলা মোট ৪৬ টি অনুসন্ধান, উন্নয়ন ও ওয়ার্কওভার কূপ খননের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এরই অংশ হিসেবে বাপেক্স এর তত্ত্বাবধানে সম্প্রতি গ্যাজপ্রমের মাধ্যমে টবগী-১,  ভোলা নর্থ-২ এর ধারাবাহিক সফল কুপ খনন ও গ্যাস আবিষ্কার পরবর্তী  গত ৯ মার্চ ২০২৩  প্রকল্পের ৩য় কুপ ইলিশা-১ স্থাপনায় খনন কার্যক্রম  শুরু হয়।  গত ১৪ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে ৩৪৭৫ মিটার গভীরতায় খনন কাজ সম্পন্ন শেষে বিভিন্ন  স্তরে ডিএসটি ( ড্রিল স্টেম টেস্ট) কার্যক্রমের পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়। 

এরই অংশ হিসেবে অদ্য ২৮ এপ্রিল ২০২৩ তারিখ সকাল ৭ টায়  সফলভাবে ১ম ডিএসটি ( ড্রিল স্টেম টেস্ট) কার্যক্রম শুরু হয়। চোক সাইজ ক্রমান্বয়ে  বৃদ্ধির মাধ্যমে উক্ত স্তরে গ্যাস উৎপাদন হার পর্যবেক্ষিত হবে। 

এক কর্মকর্তা জানান, চূড়ান্ত টেস্টিং শেষে শীঘ্রই জাতিকে  নতুন গ্যাস ক্ষেত্র আবিস্কারের শুভ সংবাদ প্রদান করার বিষয়ে আমরা আশাবাদী। পরবর্তীতে কূপের উপরের চিহ্নিত  ২য় ও ৩য় জোনে পরিকল্পনা অনুযায়ী  ( ড্রিল স্টেম টেস্ট) ও প্রোডাকশন টেস্টিং কার্যক্রম শুরু করা হবে।

ইলিশা-১ কূপে গ্যারসন্ধান পাওয়ার খবরে ভোলাবাসী উচ্ছ্বসিত। ওই গ্যাসকূপকে কেন্দ্র করে ভোলায় অনেক শিল্পকারখানা সৃষ্টি হবে বলে আশা করছে তারা। এতে স্থানীয় জনসাধারণের কর্মসংস্থান বাড়বে।

১৯৯৩-৯৪ সালে ভোলার বোরহানউদ্দিনে শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারের পর ভোলা সদর ও বোরহানউদ্দিন উপজেলায় আটটি কূপ খননের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ইলিশা-১ জেলার নবম গ্যাসক্ষেত্র। জেলায় মোট গ্যাস মজুতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৭ টিসিএফ ঘনফুট। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব